Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৮ এপ্রিল ২০২৪

ইতিহাস ও কার্যাবলি

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রত্নততত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীন ময়নামতি জাদুঘর বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলাধীন সদর দক্ষিণ উপজেলার শালমানপুর নামক গ্রামে (বর্তমানে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ২৪ নং ওয়ার্ড) অবস্থিত। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কস্থ কোটবাড়ি-বিশ্বরোড় নামক স্থান থেকে আঁকাবাঁকা সড়কপথ ধরে আনুমানিক ৩.৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে গেলে হাতের বাম দিকে শালবন বিহার। এ বিহারের সাথে লাগোয়া দক্ষিণ পাশে ময়নামতি জাদুঘরের অবস্থান।

১৯৬৫ সালে ময়নামতি জাদুঘর স্থাপন করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় লালমাই-ময়নামতি পাহাড়ে অবস্থিত শালবন বিহার, কোটিলা মুড়া, চারপত্র মুড়া, রূপবান মুড়া মন্দির ও বিহার, ইটাখোলা মুড়া মন্দির ও বিহার, আনন্দ বিহার, রাণীর বাঙলো, ভোজ রাজার প্রাসাদ, প্রভৃতি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানগুলোতে পরিচালিত প্রত্নতাত্ত্বিক খননের ফলে প্রাপ্ত প্রত্নবস্তুর সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনের জন্য শালবন বিহারের দক্ষিণ পাশে ময়নামতি জাদুঘর স্থাপন করা হয়। পরে জাদুঘর ভবনকে কেন্দ্র করে একটি বিশ্রামাগারসহ মনোরম ফুলের বাগান গড়ে তোলা হয়। ফলে পর্যটক, ছাত্র এবং গবেষকগণের নিকট গোটা ময়নামতি জাদুঘরসহ শালবন বিহার একটি আকর্ষণীয় শিক্ষা ও বিনোদন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।

ময়নামতি জাদুঘর ভবনে বেশ কিছু সংখ্যক প্রদর্শনী আধার (showcases) রয়েছে। এ প্রদর্শনী আধারগুলোতে (showcases) বিভিন্ন সময়ের প্রত্নোখননে উন্মোচিত প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাগুলোর ভূমি-নকশা, ধাতুব লিপিফলক, প্রাচীন মুদ্রা, মাটির মুদ্রক-মুদ্রিকা, পোড়ামাটির চিত্রফলক, ব্রোঞ্জের মূর্তি, লোহার পেরেক, পাথরের মূর্তি, গুটিকা, গহনা, গৃহস্থালী দ্রব্যাদি, ইত্যাদি প্রদর্শিত রয়েছে। এছাড়া প্রদর্শনী আধারের ফাঁকে ফাঁকে মেঝের উপর জাদুঘর ভবনের বিভিন্ন স্থানে কিছু পাথর এবং ব্রোঞ্জের মূর্তিও প্রদর্শিত রয়েছে। মূর্তিগুলোর কয়েকটি আদি ঐতিহাসিক পর্যায়ের প্রাচীন সমতট ভূ-খণ্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগৃহীত। এ জাদুঘরে প্রদর্শিত প্রত্নবস্তুগুলোর মধ্যে মেটেপাথরের দণ্ডায়মান বুদ্ধ, ব্রোঞ্জের বজ্রসত্ত্ব, ব্রোঞ্জের অবলোকিতেশ্বর, ব্রোঞ্জের ঘণ্টা, পাথরের মারীচী, স্থানক বিষ্ণু, তারা, গণেশ, সূর্য, প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। ময়নামতি জাদুঘরে সংরক্ষিত ও প্রদর্শিত এসব প্রত্নবস্তু প্রাচীন বঙ্গ, হরিকেল ও সমতট জনপদের অতীত স্মৃতি বহন করছে।

ময়নামতি জাদুঘরের বিক্রয় কেন্দ্রে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মুদ্রিত ও প্রকাশিত বিভিন্ন ভিউকার্ড, ফোল্ডার, পোস্টার, গাইড বই, প্রভৃতি বিক্রয় করা হয়।

১৯৮৪ সালের জনবল কাঠামো অনুযায়ী কাস্টোডিয়ান অফিস প্রধান, কর্মকর্তা ও কর্মচারিসহ ময়নামতি জাদুঘরের ২৩ জন কর্মচারি রয়েছে। এছাড়া, শালবন বিহারের পরিচর্যা ও রক্ষাবেক্ষণের জন্য বেশ কিছু সংখ্যক অনিয়নিত দৈনিক শ্রমিক রয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ আনসার ব্যাটালিয়নের একটি দল ময়নামতি জাদুঘর ও শালবন বিহারের নিরাপত্তায় সার্বক্ষনিক নিয়োজিত রয়েছে। সাথে রয়েছে সার্বক্ষনিক সিসিটিভি মনিটরিং।

ময়নামতি জাদুঘর ও শালবন বিহারের জন্য আলাদা আলাদা টিকিট কাউন্টার ও প্রবেশপথ রয়েছে। দর্শনার্থীগণ কাউন্টার থেকে সরকার নির্ধারিত মূ্ল্যে টিকিট সংগ্রহ করে জাদুঘর ও শালবন বিহার প্রতি কার্যদিবসে (খোলা-বন্ধের সময়সূচি অথবা পবিত্র রমজান মাসের সময়সূচি) পরিদর্শন করতে পারেন।